ক্ষনিকের ভালবাসা
লেখক- আদনান সামি রাজন
যখনই বাসায় ফিরতাম, কুকুরটাকে দেখতাম ঘরের দরজার সামনে ঘুরঘুর করছে। দেখতে কালো হলেও রঙটা যেন চিকচিক করত.! আমাকে দেখে শব্দ না করলেও অপরিচিত কাওকে দেখলেই চিৎকার করে উঠত.! সারা রাত বাড়ি পাহারা দিত। এই ঘেউঘেউ শুনে মাঝে মাঝে দু এক ঘা বসিয়ে দিতাম, কারন আমার পশু প্রীতি কখনই ছিল না । আমার কাছে কখনো পাত্তা পেত না কুকুর টা ।
আজ দুপুরে কুকুরটা কোথা হতে যেন উদুম পিটুনি খেয়েছে । আমার মনে হয় কুকুরটাকে পিটিয়েছ মানুষ নামে আরেক কুকুরে । পিটুনি খেলে সবাই কাঁদে, হোক সে মানুষ কিংবা পশু । পিটুনি টা কোথায় দিয়েছে বুঝতে পারছি না । কুকরটা আজ ঘেউঘেউ করছে না, হয়তো গলায় ব্যাথা পেয়েছে । নিরব হয়ে গেছে কুকুরটা । কখনও খেতে না দিলেও আজ অল্প ভাত ও পানি দিলাম, কিন্তু হায় ছুঁয়েও দেখল না । সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখি ভাতগুলো পরে আছে, সেই সাথে কুকুর টাও। একটুও নড়ছে না, শুধু কু কু শব্দ শুনা যাচ্ছে । রাত বাড়তে থাকলো, অমাবস্যার কালো রাত, গাঢ় অন্ধকার রাত, কুকুরটার জীবন প্রদীপ রাতও যেন গাঢ় হচ্ছে।
যখন রাত ১২ হবে, বাহিরে দরজার সামনে তাকায়ে দেখি, কুকুরটা শুয়ে আছে । মনে হলো, আজ তো কুকুরটা ঘেউঘেউ করছে না, আমায় দেখে দৌড়ে পালাচ্ছে ও না। দিব্যি শুয়ে আছে চোখের সামনে । কুকুরটা আমায় তাকায় একটু দেখল,। যে কুকুরের ঘেউঘেউ শব্দে বিরক্ত লাগতো, আজ হঠাৎ যেন কুকুরের ঘেও ঘেও শুনতে না পেয়ে বুকের মাঝে কেমন জানি মোচড় দিয়ে উঠল। বুঝতে বাকি রইল না তার এই রাত শেষ হবার নয়। শেষ বেলায় কুকুরের মায়া ভরা চোখ, বড়ই মায়া লাগছে। কুকুরটা কাঁদছে যন্ত্রনায়, কিন্তু আমি কাঁদছি কেন.?
জানি না.............
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম